ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিস থেকে বদলি হওয়া অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মোঃ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও মিথ্যা সম্পদ বিবরণী দাখিলের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা দায়ের করেছে।
দুদক ময়মনসিংহ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ বুলু মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, জাকির হোসেন সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় অসাধু উপায়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন এবং দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে প্রায় ১ কোটি ১ লক্ষ টাকার সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা যায়, জাকির হোসেনের নামে জমি, বাড়ি, দোকানঘর ও পুকুরসহ প্রায় ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং আসবাবপত্র, ফ্রিজ, টেলিভিশনসহ আরও কয়েক লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তবে তার বৈধ আয় থেকে এই সম্পদ অর্জনের কোনো গ্রহণযোগ্য উৎস পাওয়া যায়নি।
তদন্তে দেখা গেছে, তিনি সম্পদ বিবরণীতে মাত্র ৬৬ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন, অথচ যাচাই করলে তার নামে মোট ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। অর্থাৎ তিনি এক কোটি টাকারও বেশি সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেছেন।
দুদক কর্মকর্তা বলেন, “সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও তা গোপন করা অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ। আমরা এই মামলার মাধ্যমে বিষয়টি কঠোরভাবে অনুসন্ধান করব এবং প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জাকির হোসেন ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তার সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও আয়ের সঙ্গে মিল না থাকা বিষয়টি অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। মামলাটি ১০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার সময়কাল ধরা হয়েছে ১৯৯১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।
দুদক আশা করছে, এই মামলার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সততা ও দায়বদ্ধতার বার্তা প্রচার হবে এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বেসরকারী হাসপাতাল ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টার মালিকদের কাছ থেকে নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের নামে সিভিল সার্জনসহ ডিজি অফিসের এক পরিচালকের নাম ভাঙিয়ে মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা আদায় করার অভিযোগসহ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মোঃ জাকির হোসেনকে নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শূন্য পদে বদলী করার পরও যোগদান না করে প্রায় আড়াই মাস যাবত অনুপস্থিত থাকায় খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আরেফিন আজিম যোগদান না করায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন।

