• এজাহারনামীয় আসামী গ্রেফতারে অনীহা 

ইয়াছিন গাজী:
গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর হামলার ঘটনায় গাছা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ ৫৩ জনকে আসামী করে হত্যা চেষ্টা গাছা থানায় ০৩ নং মামলাটি করা হয়। মামলায় গাছা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মহিউদ্দিন মহি ছাড়াও আরও ৫২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গজারিয়া এলাকার বাসিন্দা ছোবাহান আলী এ মামলাটি দায়ের করেন। উনি বর্তমানে গাছা থানার শরীফপুর এলাকায় বসবাস করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারীদের বাধা, দমন-নির্যাতন চালায়। এই ঘটনায় রুজু হওয়া হত্যা চেষ্টা মামলার অন্যতম ২৮ নং আসামী আওয়ামী লীগের আর্শীবাদপুষ্ট মাদক কারবারি জুয়েল রানা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা ও আহতের পরিবার। জুয়েল রানা মহানগরের ২৭ নং ওয়ার্ড লক্ষীপুরা এলাকার জুলহাসের ছেলে। হত্যা চেষ্টা মামলা বাকি আসামীরা পলাতক থাকলেও জুয়েল রানা দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দুুপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কে পশ্চিম পাশে সমাবেশে ছাত্ররা অংশগ্রহন করে। এক পর্যায়ে উল্লেখিত এই মামলার ১নং আসামী মহিউদ্দিন মহি ও ২নং আসামী আতাউল্লাহ মন্ডল, ২৮নং আসামী লক্ষীপুরা এলাকার মাদক কারবারি জুয়েল রানাসহ অপরাপর এজাহারনামীয় আসামীরা সশরীরে উপস্থিত থেকে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় হত্যার উদ্দেশ্যে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে ২৫-৩০ জন আন্দোলনকারীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা ও কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর সাবেক এমপি জাহিদ আহসান রাসেল, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের আর্শীবাদপুষ্ট মাদক কারবারি জুয়েল রানা হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা নিজ এলাকায়। এখনো তার কাছে জিম্মি এলাকাবাসী।
অন্যদিকে গাজীপুর সদর থানার সাবেক সাব-ইন্সপেক্টর বর্তমানে গাজীপুর পিবিআইতে কর্মরত ইন্সপেক্টর ফিরোজের সাথেও রয়েছে তার সখ্যতা। ২৪ ঘন্টা ফিরোজের ছত্রছায়ায় থেকেও এখন অনেকটা বেপরোয়া জুয়েল রানা। প্রকাশ্যে ঘুরে বেরিয়ে করছেন মাদক ব্যবসা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে গাছা থানার পুলিশ এ বিষয়ে রহস্যজনকভাবে নীরব ভূমিকা পালন করায় হত্যা চেষ্টা মামলার বাদী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আহতদের পরিবার এবং সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এবিষয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

স্থানীয়দের সূত্রে আরও জানা গেছে, এই মামলায় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা পলাতক ও গা ঢাকা দিলেও মাদক কারবারি জুয়েল রানা এখনো বেপরোয়া। হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মাদক মামলা। অথচ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে না। অনেকটা নির্ভয়ে তিনি গোপনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ হয়ে নিজ এলাকা লক্ষীপুরায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য কাজ করছেন।

এবিষয়ে জানতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার ফাহিম আসজাদের সাথে মুঠোফোনে ও সরাসরি একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও উনি তথ্য প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন।