ঢাকাThursday , 6 March 2025
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জনপ্রিয় সংবাদ
  9. জাতীয়
  10. বিনোদন
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গাজীপুরে পুলিশের এক ইন্সপেক্টরের ছত্রছায়ায় মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা ও তার সহযোগীরা ধরাছোঁয়ার বাহিরে

ইয়াছিন গাজী
March 6, 2025 8:50 pm
Link Copied!

ইয়াছিন গাজী:

গাজীপুর জেলার পিবিআই এর পুলিশ ইন্সপেক্টর ফিরোজের ছত্রছায়ায় গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার লক্ষীপুরা এলাকার মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা ও তার সহযোগীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাকে গ্রেফতার করতে গেলে বিপাকে পড়তে হয় পুলিশকে।

কিছুদিন আগে সদর থানার সাবেক এএসআই জহিরুল ইসলাম মাদক সংক্রান্তে গ্রেফতার করে তাহমিনার বিরুদ্ধে মাদকে মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে সদর থানার ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম ও এসআই আবু ছাঈদকে অভিযূক্ত না করে শুধুমাত্র প্রতিহিংসা বশত এই এএসআই এর বিরুদ্ধে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে অভিযোগ দেয়। এরপর গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি চৌকস টিম গত বুধবার (২০২৪ সালের ৪ ডিসেম্বর) বিকালে মহানগরীর সদর থানার লক্ষীপুরা এলাকায় অভিযানে যায়। এসময় ২৫০ গ্রাম হেরোইনসহ মাদক কারবারি তাহমিনার মেয়ের জামাই সালাউদ্দিনের ছেলে মোঃ রানা(৩০), রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানা এলাকার মোঃ আনারুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাজিরুল ইসলাম (২৫) এবং মোঃ গোলাম মোস্তফার ছেলে মোঃ আব্দুল হালিম (২১)কে গ্রেফতার করে। ডিবির এসআই মোঃ কামরুল হাসান, এএসআই শরীফুল ইসলাম অবৈধ মাদক দ্রব্য ধৃত আসামীরা পরস্পর জ্ঞাতসারে নিজ নিজ দখল ও হেফাজতে রাখার অপরাধে তাহমিনাকে পলাতক আসামী করে সকল আসামীদের বিরুদ্ধে ২০১৮ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ৮(গ)/৭(গ)/৪১ ধারায় জিএমপি সদর থানায় ৬ নং মামলা রুজু করা হয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় এই মাদক মামলার বাদী হয়। এই কারণে পুনরায় ক্ষীপ্ত হয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে পুলিশকে মাদক নির্মূলে নিষ্ক্রিয় করতে এসআই শরীফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা সদর থানার লক্ষীপুরা এলাকার জুলহাসের স্ত্রী। তাদের ৩ মেয়ে শাহনাজ, রুনা, রাজিয়া। এক ছেলে জুয়েল। শাহনাজ মারীয়ালী কলাবাগান এলাকার মাদক কারবারি গাফফারের সাথে বিবাহ হয়েছে। তাহমিনার পুরো পরিবারটি দীর্ঘদিন যাবত মাদকের সাথে জড়িত। ইতিপূর্বে তাহমিনা মুন্সিপাড়া এলাকায় মাদক কারবার করে। এরপর লক্ষীপুরা এলাকায় মাদক ক্রয় বিক্রয়ের অনুকূল পরিবেশ থাকায় এই এলাকায় বসবাস শুরু করে। জামালপুর জেলার পুলিশ ইন্সপেক্টর ফিরোজের সাথে জুয়েলের একাধিক ছবি ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়া হয়েছে। এই ছবি দ্বারাই প্রমাণ মিলে এই ইন্সপেক্টরের সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এই পরিবারের। এছাড়াও তাহমিনাসহ লক্ষীপুরা এলাকার মাদক ব্যবসায়ী সজিব, মধু, হারুন, শিউলি, ফাটা মামুন, মোটা রনিসহ তাদের সহযোগীদের সাথে সখ্যতা রয়েছে কতিপয় হলুদ সাংবাদিক ও পুলিশের গুপ্তচরদের। যার কারণে পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযানে গেলেও মাদক নির্মুল করতে পারে না। এর ফলে দাপটের সাথে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক দ্রব্য ক্রয় করে  এই এলাকায় বিক্রি করে থাকে।
আরো জানা যায়, ১৯৯০ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৭(ক)/৯(ক) ধারায় ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবর রুজু হওয়া জয়দেবপুর থানার ১৬৫ নং মামলা, ২০১৬ সালের ৯ এপ্রিল রুজু হওয়া জয়দেবপুর থানার ৩৪ নং মামলা, ২০১৬ সালের ৩ জুন মাসে রুজু হওয়া জয়দেবপুর থানার ৯ নং মামলা, ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর মাসে রুজু হওয়া জয়দেবপুর থানার ৫৩ নং মামলা, ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল রুজু হওয়া জয়দেবপুর থানার ১৭ নং মামলা এবং ২০১৮ সালের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) সারণির ৮(গ) ধারায় ২০২৪ সালের ২৭ মার্চ মাসে রুজু হওয়া সদর থানার ৫৬ নং মামলাসহ আরো একাধিক মাদক মামলার আসামী এই তাহমিনা। তার ছেলে জুয়েল আওয়ামীলীগের অনুসারী। তার ছেলে ২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর মাসে রুজু হওয়া গাছা থানার ০৩ নং মামলার ২৮ নং আসামী। তাকে গ্রেফতারে পুলিশ কোন অভিযান পরিচালনা করে নি।

এবিষয়ে স্থানীয় এক তরুণী প্রতিবেদককে জানান, মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা পলাতক থাকায় তার ময়েরা মাদক কারবার করছে। এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মিথ্যা মামলার হুমকী প্রদান করে।

স্থানীয় রিপন নামের এক যুবক জানান, পুলিশের ইন্সপেক্টর ফিরোজে ছত্রছায়ায় তাহমিনা মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে। এলাকাবাসী তাহমিনার বিরুদ্ধে মাদক কারবার বন্ধ করতে পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দাখিল করেছে।

এবিষয়ে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের এসআই কামরুল ইসলাম জানান, দ্রুত মাদক সম্রাজ্ঞী তাহমিনা ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এব্যাপারে তিনি মাদক কারবারিদের তথ্য প্রদানের জন্য সুশীল মহলের সহযোগীতা চেয়েছেন।

এবিষয়ে গাজীপুর জেলার পিবিআই এর পুলিশ ইন্সপেক্টর ফিরোজ জানান, সদর থানায় কর্মরত থাকাকালীন তাদের সাথে পরিচয় ছিল।