‘দৈনিক প্রলয়’ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলার তীব্র প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার (০৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তন-এর সামনে আয়োজিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে আসা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিক সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন। সাংবাদিক নেতারা এই মামলাকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা ও সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন একজন নির্ভীক ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিক হিসেবে সমাজে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ধরনের মিথ্যা মামলা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশকে বিনষ্ট করছে। বক্তারা অবিলম্বে মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলাটি প্রত্যাহার এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা হুঁশিয়ারি দেন যে, দাবি পূরণ না হলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
মানববন্ধন শেষে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ একটি মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, অবিলম্বে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মিথ্যা মামলার শিকার সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক ছাড়াও বিপুল সংখ্যক সাধারণ নাগরিক অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
সাংবাদিকদের বক্তব্য: পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা এই মামলাকে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সরাসরি হুমকি এবং সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধের নিকৃষ্টতম প্রচেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেন।
সাংবাদিক ইউনিয়নের এক নেতা বলেন, “সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেন তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোনো প্রভাবশালী মহলের স্বার্থের পথে বাধা সৃষ্টি করেছেন। তারই প্রতিশোধ নিতে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে দেশে সৎ সাংবাদিকতা আজ চরম ঝুঁকির মুখে। আমরা অবিলম্বে এই ষড়যন্ত্রমূলক মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি এবং যে বা যারা এর পেছনে আছে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
তারা আরও বলেন, “আমরা কোনো প্রকার ভয়ভীতি বা মিথ্যা মামলাকে ভয় পাই না। সত্য প্রকাশে আমরা সবসময় অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকার যদি অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করে, তবে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
সাধারণ জনগণের প্রতিক্রিয়া: স্বাধীন সাংবাদিকতা চাই
এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সাধারণ নাগরিকরা সাংবাদিকদের প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। তারা মনে করেন, সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
একজন সাধারণ অংশগ্রহণকারী বলেন, “সাংবাদিকরা হলেন সমাজের চোখ ও বিবেক। তাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা মানে জনগণের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক। সাংবাদিকরা যদি নির্ভয়ে রিপোর্ট করতে না পারে, তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পাবো কোথায়?”
আরেকজন নাগরিক বলেন, “যাঁরা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেন, তারা আসলে সমাজে দুর্নীতি ও অনাচারকে প্রশ্রয় দিতে চান। আমরা চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং মিথ্যা অভিযোগ দায়েরকারীদের বিচার হোক।”
দাবিসমূহ
মানববন্ধন থেকে অংশগ্রহণকারীরা সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত দাবিগুলো তুলে ধরেন:
১. দৈনিক প্রলয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলাটি অবিলম্বে নিঃশর্তে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. মিথ্যা মামলা দায়েরের সাথে জড়িত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
৩. সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে সকল প্রকার হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই সংবাদ প্রতিবেদনটিতে কি সাধারণ জনগণ ও সাংবাদিকদের বক্তব্য যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়েছে?

