ঢাকাSunday , 5 October 2025
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন বিচার
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ক্যাম্পাস
  6. খেলাধুলা
  7. গণমাধ্যম
  8. জনপ্রিয় সংবাদ
  9. জাতীয়
  10. বিনোদন
  11. রাজধানী
  12. রাজনীতি
  13. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মামলার ঘটনার দিন বাদী নিজেই পলাতক কিন্তু আসামী সাংবাদিক

Link Copied!

  • পলাতক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে বাদী বানিয়ে আহত সাংবাদিককে ফাঁসানোর অভিযোগ

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি

গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের পর জিএমপি’র সাবেক কমিশনার ক্ষীপ্ত হয়ে উনার মদদপুষ্ট পলাতক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে বাদী করে আহত সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার হোসেনকে মিথ্যা মামলায় ফাসানোর অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের দমন না করে মিথ্যা চাঁদা বাজির মামলা দিয়ে সাংবাদিককে দমিয়ে রাখার চেষ্টায় পুলিশি হয়রানি, হামলা, মিথ্যা মামলা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দমন করার অপচেষ্টা করছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পুলিশের নীরব ভূমিকায় তাদের সামনেই প্রকাশ্যে চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হামলায় এই সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং গত ১৮ আগস্ট দৈনিক প্রলয় পত্রিকায় পত্রিকায় “জিএমপি কমিশনারের মদদপুষ্ট অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজু সাহা” এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর গত ২১ আগস্ট মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলাটি রুজু করা হয়েছে।
জানা যায়, জয়দেবপুর রেলস্টেশনের উত্তর পাশে জয়দেবপুর এলাকায় রেলওয়ের মূল্যবান জমি একদল প্রভাবশালী দখলদাররা রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে দোকানপাট, হোটেল, কাপড়ের মার্কেট, বাজার ইত্যাদি গড়ে তুলে স্থানীয় প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা ও উদাসীনতায় রেলওয়ে পুলিশ, আরএনবি ও রেল স্টেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বৈষয়িকভাবে সন্তুষ্ট করেই নিয়মিত চাঁদা বাজি করছে। এর ফলে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এমনকি সদর থানার কলাপট্টি নামক স্থানে মার্কাস মসজিদ রোডস্থ গ্রীন হাসপাতালের সামনে সিএনজি ও অটোরিকশার স্ট্যান্ড তৈরি করে চাঁদা বাজি করছে। এসংক্রান্তে গত ০৬ আগস্ট দুপুর ৩ টার দিকে এই সাংবাদিক সরেজমিনে তথ্য, স্থিরচিত্র বা ফুটেজ সংগ্রহ করে দুপুরের খাবার খেতে হোটেলে যাওয়ার পথে সদর থানার ৭/৮ জন পুলিশের সামনেই সাহাপাড়া এলাকার অস্ত্রধারী চিহ্নিত সন্ত্রাসী রক্তিম, সৌরভ, রাজমণি সাহা রাজু, ফরিদ, রায়হান, তারিফসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন আনোয়ারের উপর অতর্কিত হামলা করে তথ্য ও ফুটেজ রক্ষিত মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় ইট দিয়ে উনার পা থেঁতলে দেওয়া পর অচেতন অবস্থায় সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। এসময় রাজমণি সাহা রাজুসহ কয়েকজন সন্ত্রাসীকে পুলিশ গ্রেফতার করেও ছেড়ে দেয়। এঘটনায় আনোয়ারের মা আনোয়ারার এজাহার দায়েরের প্রেক্ষিতে করলে সদর থানায় গত ০৭ আগস্ট ১৫ নং মামলাটি করা হয়। এ হামলার ঘটনায় সারাদেশে গণমাধ্যমকর্মীগণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করতে থাকে এবং দেশের অধিকাংশ ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এর আগে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রক্তিম, সৌরভ, রাজমণি সাহা রাজুসহ আরো ১৮/১৯ জন সন্ত্রাসীকে আসামী করে  গত ০৭ অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর পৌনে ২ টার দিকে প্রকাশ্যে গোলাগুলি করে হত্যা চেষ্টার অপরাধে পেনাল কোডের ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩২৪/৩২৬/৩০৭ ধারায় ১৩(১০)২০২৪ নং মামলাটি রুজু করা হয়। ঘটনার দিন জিএমপি সদর থানার স্থানীয় কৃপাময়ী কালি মন্দিরের সামনে সাহাপাড়া এলাকার সন্ত্রাসী রাজমনি সাহা রাজু, সাব্বির আহমেদ সৌরভ, রক্তিম প্রত্যেকে বিদেশী অবৈধ পিস্তল দিয়ে গুলি করে। এর ফলে সফিকুল ইসলাম টিটু ও পথচারী সাবেদ গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা খুন করতে ধারালো রাম দা দিয়ে কোপ দিয়ে মনিরুল ইসলাম সাগর, মমিন, ওলিউল্লাহ তুহিনকে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর আহত করে। এঘটনায় তুহিনের স্ত্রী আরিফা আক্তার হাসি থানায় এজাহার দায়ের করলে মামলাটি রুজু হয়। মামলাটি দায়েরের পর ১০ মাসেও পুলিশ অলৌকিক কারণে কোন আসামী গ্রেফতার করে নি। এমনকি এই মামলার পলাতক আসামীরাই এই সাংবাদিকের উপর নৃশংস হামলা করেছিল। পরবর্তীতে এবিষয়ে জানাজানি হলে সাথে সাথেই গত ১১ আগস্ট  সন্ত্রাসীরা উচ্চ আদালত হতে ৬ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন প্রাপ্তির পর বেরিয়ে আসে থলের বেড়াল।  গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে দেখা যায়, রাজু সাহাসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেরি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে রয়েছে গভীর সখ্যতা। যার কারণে সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার ও গ্রেফতারে পুলিশ নিস্ক্রিয় ছিল। এ ঘটনাটি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেশ জটিল এবং স্পর্শকাতর। এঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের পরস্পর যোগসাজশে আহত সাংবাদিক আনোয়ারকে ক্ষতি করতে চলতে থাকে নানা ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার। এরই প্রেক্ষিতে সদর থানার ১৩(১০)২০২৪ নং মামলার এজাহারনামীয় আসামী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজু সাহা @ রাজমণি সাহা রাজু পলাতক থাকা স্বত্তেও তাকেই বাদী বানিয়ে ১৮ দিন আগের অর্থাৎ গত ০২ আগস্টের মিথ্যা চাঁদা বাজির ঘটনা সাজিয়ে সাংবাদিক আনোয়ারকে আসামী করে মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে আনোয়ারকে হেরেজ হয়রানির করার চেষ্টা করছে জিএমপি পুলিশ। যদি গত ২ আগস্ট আনোয়ার চাঁদা দাবি বা এই অপরাধ করত চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পুলিশ অবশ্যই আনোয়ারকে গ্রেফতার করত। এরই প্রেক্ষিতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়, আনোয়ারের বিরুদ্ধে এই চাঁদাবাজির মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, পুলিশ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড করলে বিচার করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আছে। কিন্তু সাংবাদিক যদি কোন অন্যায় করে বিচার করার জন্য প্রেস কাউন্সিল থাকা স্বত্তেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়। কারো দূর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ফৌজদারি ও দন্ডবিধি আইনে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা দেওযা বন্ধে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়। গণমাধ্যমকে স্বাধীন মত কাজ করলে পুলিশসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে অনিয়ম দূর্নীতি অনেকাংশেই বন্ধ হবে। একারণে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখার সংস্কৃতি পুরানো।

এবিষয়ে জানতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, উনি সদর থানার ১৩(১০)২০২৪ নং প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা চেষ্টা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত ২০২৪ সালের ০৭ অক্টোবর দুপুরে প্রকাশ্যে গোলাগুলি করে হত্যা চেষ্টার মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামী রাজু সাহাসহ বাকি আসামীরা গত ১১আগস্ট, ২০২৫ মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন পেয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে রাজু সাহা গত ০২ আগস্ট পলাতক ছিল।